بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু
কুফফাররা (এটা কোন গালি নয়, আল্লাহকে অস্বীকারকারী অর্থে ইউজ করেছি) বিলিভ করে
আমাদের এই জীবনটা হল একটা যুদ্ধ। কার সাথে যুদ্ধ? প্রকৃতির সাথে। জন্ম থেকে মৃত্যু
পর্যন্ত আমরা প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে একটা সময় এই প্রকৃতিরই অংশ হয়ে যাই। এটাই
তারা বিশ্বাস করে। পৃথিবীর নানা প্রান্তে নানা ধরনের মতবাদ চালু আছে। আপনি যদি
পশ্চিমা সমাজের দিকে তাকান তাহলে বুঝবেন তারা কোন ভিউটা অন্তরে ধারণ করে আছে। ফর
এক্সাম্পল, নেইটিভ অ্যামেরিকানদের কথাই ধরুন। তাদের আদি পিতারা মনে করত তারা
প্রকৃতির একটা অংশ, এজন্য তারা প্রকৃতির বিরুদ্ধে যেতে চাইত না, এর কোন ক্ষতি করত
না। তারা মনে করত শুরু থেকে প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ চলছে। কিরকম সে যুদ্ধ? একেবারে
বাচ্চাকালে মানুষ যখন পৃথিবীতে আসে তখন তাকে গরম ঠাণ্ডার সাথে খাপ খাইয়ে চলতে হয়।
যদি সে খাপ খাইয়ে নিতে পারে তখনই সে বড় হয়। যদি না পারে তাহলে তাকে প্রকৃতি ফেরত
নেয়। পশ্চিমা সমাজের ভিউ আর নেইটিভ অ্যামেরিকানদের ওল্ড ভিউয়ের মধ্যে কোন তফাৎ
নাই। একটা বাচ্চা যখন বড় হয় তারা ভাবে সে প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে জিতে বড় হচ্ছে।
এইজন্য তারা তার বার্থডে সেলিব্রেট করে! কেক বানায়, ফুর্তি করে, মোমবাতি ফুঁকে গান
গায়।
আমরা মুসলিম। আমাদের সম্পূর্ণ আলাদা ভিউ আছে। আমরা এইসব সস্তা বিশ্বাসে
বিশ্বাসী নই। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের জীবন: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সবকিছুই
পূর্বনির্ধারিত। কে নির্ধারণ করেছেন? আল্লাহ সুবহানু ওয়া তা’আলা। তিনি জানেন
আমাদের লাইফস্প্যান কতটুকু! আমরা কখন মারা যাব? সবকিছুই তিনি ঠিক করে রেখেছেন।
বর্তমানে আমরা মুসলিমরা অন্ধের মত কুফফারদের লাইফস্টাইল পয়েন্ট টু পয়েন্ট ফলো
করছি। কুর’আন-সুন্নাহকে আমাদের খ্যাঁত মনে হয়। কেক বানিয়ে মোমবাতি ফুঁকিয়ে আমরা
আমাদের জন্মদিন পালন করি। হায়! আমরা এসব কি করছি?
“আমরা তো মর্যাদাহীন লোক ছিলাম, আল্লাহ আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন ইসলামের মাধ্যমে। সুতরাং, আমরা যদি আল্লাহ আমাদেরকে যা দ্বারা সম্মানিত করেছেন তা থেকে দূরে সরে গিয়ে অন্য কোথাও সম্মান খুঁজি তাহলে আল্লাহ আমাদেরকে পুনরায় অপমানিত করবেন।”
— উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু) [১]
একটা বছর চলে গেছে। আমি মৃত্যুর দিকে ক্রমশ এগুচ্ছি। দুনিয়ার দিনগুলো শেষ হয়ে
আসছে আমার। আমি কি আমার আখিরাতের জন্য কিছু কামাই করতে পেরেছি? আমি কতটুকু সফল?
---- আমরা কি এসব ভেবে দেখি? উত্তর যদি না হয়। তাহলে আমাদের চেষ্টা করা
উচিত। মৃত্যুচিন্তা বাড়িয়ে দেয়া উচিত। ভেতর থেকে কান্না আসা উচিত। ফুঁপিয়ে কান্না
আসা উচিত। এটা মাস্ট! যদি না আসে তাহলে বুঝতে হবে আমার ভেতরটা শুকিয়ে গেছে এজন্য
আমি আহম্মকের মত কেক কেটে বার্থডে সেলিব্রেট করি। জন্মদিন কোন সেলিব্রেশনের জিনিস
না। বছর ঘুরে এই দিনটা আবার এসে আমাদেরকে কিছু কথাই জানান দেয়: মৃত্যু
আসছে, সময় কমছে, আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছ কি?
সর্বশেষে, ইমাম গাজ্জালির (রাহমাতুল্লাহ আলাইহি) ভাষ্যে নিজের জন্য (অতঃপর সবার জন্য) একটা স্মরণিকা দিতে চাই:
“যুবক, বাজারে তোমার কাফনের কাপড় হয়তোবা চলে এসেছে। আর এদিকে তুমি এখনো বেখবর।”
জাজাকুমুল্লাহু খাইরান।
২১ মুহররম, ১৪৩৭ হিজরী
৩ নভেম্বর, ২০১৫ খৃস্টাব্দ
সূত্র: [১] মুসতাদরাক আল হাকিম – ২০৭, আয-যাহাবি এটিকে সহীহ বলেছেন তালখিস গ্রন্থে এবং আলবানি সহীহ বলেছেন
সিলসিলাহ সাহিহা গ্রন্থে, ৫১
No comments:
Post a Comment