Tuesday, August 12, 2014

পর্যবেক্ষণ - ১ : ফিতনাহ


                                                          بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ 

                                     শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু






গতকাল মালিবাগ (এক দ্বীনী ছোট ভাইয়ের বাসায়) যেতে যেতে পথে অদ্ভুত সব জিনিস দেখলাম। গরম একটু বেশিই পড়েছে মনে হয়! হাফ প্যান্ট পড়ে কালা সানগ্লাস পড়ে রিকশায় চড়ে ঘুরে বেড়ানো পর পর ৩ বান্দাকে দেখলাম! আবার একজনের সাথে একজন হিজাবী আপুও ছিলেন! আচ্ছা, গরম যখন লাগতেসেই লুঙ্গি পড়লেই তো পারত, বেশ আরামদায়ক এবং সতরও ঢাকতো। ফিতনাহ শুধু আপুরাই ছড়ান না, ইয়ো টাইপ ভাইয়াও ছড়ান।

দুনিয়া এখন উল্টাইয়া গেছে। টাকনুর উপর প্যান্ট পড়ার কথা যেখানে ভাইয়াদের, সেখানে আপুরা পড়া শুরু করেছেন। কি অবস্থা! আর পাশেই দাড়িঁয়ে থাকা ভাইয়াটার প্যান্ট ধূলিতে লুটোপুটো খাচ্ছে!

আলহামদুলিল্লাহ। এত গরমের মাঝে অনেক ভাইয়া-আপুরা দ্বীন মেনে চলছেন। রাস্তায় এসব ভয়ানক ফিতনাহ দেখা মাত্রই মাথা নিচু করে ফেলছেন। 'লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ' পড়ছেন মনে মনে।

মেজাজটা খারাপ হয় যখন দেখি, এসব সম্মানিত ভাই-বোনদের নিয়া যারা মকারি করে। ইচ্ছে হয় কানের নিচে কষে একটা থাপ্পর দিই।

বসুন্ধরায় কিছুদিন আগে এক হিজাব পরিহিতাকে দেখলাম অমন পাবলিক প্লেসে ধূমপান করতে। এরা হল নামে হিজাবী, দেখেন গিয়ে হয়তোবা বয়ফ্রেন্ড বলসে করতে তাই হিজাব করে। আস্ক করলে দেখা যাবে, হিজাবের মেইন কনসেপ্ট সম্পর্কে তার কোন আইডিয়াই নাই। সে জায়গায় সারাদিন এতই ফিতনাহ বিরাজ করে যে, এ প্রসঙ্গে আমার এক দ্বীনী দোস্ত বলেছিল, "বসুন্ধরায় ৫ ঘন্টা কাটানো মানে, হাজার বছরের ঈমান নষ্ট হওয়া।" তবে, দ্বীনী আড্ডা দেবার জন্য ভালো, শান্ত জায়গা আছে সেখানে 

বেশ কয়েকমাস আগে চীন-মৈত্রীতে এমন আরেক বান্দার দেখা পেলাম। মুখে লম্বা দাড়িঁ। টাকনুর উপর প্যান্ট। মনে মনে বললাম মাশা'আল্লাহ। যেইনা কথা বলব ভাবলাম, দেখি সিগ্রেট টানছে, আর ধোঁয়াটা ছাড়ল মুখের উপর। পুরাই প্যাথেটিক!!

কিছু ব্লগে পড়েছিলাম, বোরকা-হিজাব পড়ে প্রেম করে। কথা সত্য। একবার চন্দ্রিমা উদ্যানের পাশ দিয়ে যাবার সময় এসব দৃষ্টিগোচর হয় আমার। বেশিরভাগ স্কুল-কলেজগামী। যাতে না চিনতে পারে এই পন্থা। তাই বলে প্লিজ এটা ভেবে বসবেন না যে সব বোরকারাই এসব করে। আমি অনেক আপুকে চিনি যারা অনেক আগে হতেই রেগুলার বোরকা, নেকাব, হিজাব মেইনটেইন করেন। তাই বলে বিপথে যাওয়া কিছু বান্দার জন্য ম্যাক্সিমাম ভালোদের উপর কেন দোষ চাপাবো আমরা!

আমার তো মেজাজ বিগড়ে যায় মাঝে মাঝে এসব দেখলে। তারপর নিজেকে কন্ট্রোল করে মনকে এটাই বুঝ দিই যে, হয়তোবা এখন তারা এমন করতেসে, একদিন বুঝবে, তাওবা করবে আল্লাহর কাছে। দ্বীনের পথে আসবে। সঠিকভাবে পর্দা মেইনটেইন করবে। ধূমপান ছেড়ে দিবে। ইন শা আল্লাহ।

আমাদের এসব বিপথগামী, জাহিলিয়াতে ডুবে থাকা ভাই-বোনগুলোর জন্য দু'আ করা কর্তব্য। স্মর্তব্য যে, আমরাও একদা এসব রোগে (এমন না, অন্যভাবে) ভুগেছি, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ সুবহানাল্লাহু তা'আলার অশেষ রাহমাতে আজ আমরা দ্বীনের পথে আছি। আল্লাহ সুবহানাল্লাহু তা'আলা যেন বিপথে চলে যাওয়া এ মানুষগুলোকে হিদায়াত দান করুন, সিরাত্বাল মুসতাক্বিমে নিজের জীবনকে পরিচালিত করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

No comments:

Post a Comment