Wednesday, February 11, 2015

পর্যবেক্ষণ - ৩ : কর্পোরেট ফ্রি-মিক্সিং

                                             بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

                        শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়অতি দয়ালু

প্রায় ৫ মাস পর ব্লগে কিছু লিখতে বসলাম। কাজের চাপে লিখালিখির সময় হয়ে উঠে না আর আগের মতন। মাথায় অনেক বিক্ষিপ্ত চিন্তা-ভাবনা ঘুরাফেরা করে। বাস্তব জগত হতে প্রাপ্ত কিছু চিন্তা এতদিন ধরে মজুদ করে আসছি। হঠাৎ ভাবলাম, ছুটি যখন মিলেছে একটু লিখালিখি হয়ে যাক আগের মতন। সে সুবাদে আজকে লিখতে বসা। আজকের লিখার পটভূমি কর্পোরেট দুনিয়ায় নারীপুরুষের অবাধ মেলামেশাকে ঘিরে আমার চিন্তাভাবনা। অনেকেই অনেক কিছু চিন্তা করে। অনেকে ফাতওয়া দেয় এই বিষয়ে। আমি যেহেতু কোন আলেম নই, কেবল একজন ত্বালিবুল ইলম; সেহেতু আমার দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে চাই কোন ধর্মীয় রেফারেন্স না দিয়ে। বলতে পারেন Neutral Way তে চিন্তন। কাজের কথায় আসি। 

মেয়েরা কর্পোরেট জোনে ছেলেদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করুক এটা আমি চাই না প্রতিদিন কর্পোরেট হাউজে এসবের কদর্যতা দেখছি আমি আমি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে বলব, মেয়েদের ঘরের বাইরে কাজই করা উচিত না কাজ বলতে সেসব প্লেসে যেখানে ফ্রি মিক্সিংএর চান্স আছে

প্রতিদিন দেখি নারী পুরুষের গা ঘেষাঘেষি টাইপের আচরণগুলো। একটা অবিবাহিত ছেলে কেন একটা বিবাহিত মেয়ের চুলের প্রশংসা করে টান দিবে! এটা আমার বুঝে আসেনা। এক্ষেত্রে অনেকেই ঢালাওভাবে ছেলেদের দোষ দিয়ে থাকেন। আমি মনে করি ছেলেটির সাথে সাথে মেয়েটিরও দোষ আছে। কেননা সে কেন প্রশ্রয় দিচ্ছে পরপুরুষকে এত ঘনিষ্ঠ হতে! মেয়েটি লাই দিচ্ছে বলেই তো ছেলেটি মাথায় উঠে নেচে চলেছে। প্রতিদিন দেখি, স্কার্ফিরা (মডারেটরা যাদের হিজাবি বলেন) পুরুষ কলিগদের সাথে হিহি হাহা করে। লাঞ্চ আওয়ারে একসাথে.... কিছু জিনিস চোখে পড়ে, যেসব জিনিস আমার লিখতে বাঁধে, সহজে বলা যায় না সেসব

আলহামদুলিল্লাহ, আমি যে জোনে কর্মরত সেখানে যে 'জন প্রকৌশলী আছেন সবাই ইসলামের হুকুম আহকাম সম্পর্কে অবগত। জামআতে সালাত পড়েন, নারীদের ঘরের বাহিরে ফ্রি মিক্সিং জোনে কাজের ঘোর বিরোধী। ভাইদের স্ত্রীরা সবাইই গৃহিণী। আর আমার জোনে কোন মেয়ে নাই। ফিতনাহ হতে বেঁচে আছি বলতে গেলে, আলহামদুলিল্লাহ

কিন্তু অফিসিয়াল পারপাসে, প্রায়ই অন্য জোনগুলোতে ভিজিটে যেতে হয়। অন্য জোনের প্রকৌশলীদের সাথে ডিরেক্ট ইন্টারেকশনে যেতে হয়। সেক্ষেত্রে বাঁধে বিপত্তি, এটা আমার ক্ষেত্রেই হয় বলে মনে হয়। অনেক কষ্ট করে সে ঘন্টাগুলো পার করে দিই অফিসে। আল্লাহ মাফ করুন আমায়। একেবারে প্রয়োজন ছাড়া কোন কথাই বলি না, যদিও বিপরীত দিক হতে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়াটা অনুভব করি

আমি ফেইসবুকে নারীর ঘরের বাহিরে কাজের ব্যাপারে কিছু লেখা লিখেছিলাম। তা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল অফিসের কিছু 'স্কার্ফি' কলিগদের (ইনারা ফলো করেন)। ইনারা একদিন আক্রমণ করে বসেছিলেন এই বলে, 

'এত পড়াশুনা করেছি কিসের জন্য? প্রেস্টিজের ব্যাপার-স্যাপার। জামাইয়ের টাকায় আমি চলতে পারবো না!'....

তাদের এসব কথা আমায় খুব অবাক করে। আমার আম্মা একজন শিক্ষিত মহিলা। তিনি একজন গৃহিণী, কোন চাকরী-বাকরী না করে আমাদের পিছেই উনার সারাটা সময় ব্যয় করে দিয়েছেন। শুধুমাত্র আমাদের মানুষ করার জন্য। উনি চাকরী করলে বোধহয় কাজের বুয়াদের হাতেই মানুষ হতাম আমরা। আর বর্তমানে ক্যারিয়ার সচেতন মায়েদের বাচ্চাদের বেলায় ঠিক এটাই হচ্ছে। তারা সকাল টু সন্ধ্যা অফিসে সময় কাটাচ্ছেন, পুরুষ কলিগদের সাথে হিহি হাহা করছেন আর তাদের কোমলমতি বাচ্চারা বেবিকেয়ারে/বুয়ার কাছে পড়ে আছে। আমি প্রতিদিন এসবই দেখছি

ঘরের বাহিরে ফ্রি মিক্সিং জোনে নারীদের কাজের ব্যাপারে আমি সচেতন, আলহামদুলিল্লাহ। আম্মাকে দেখেছি। খুব চাই আমার ভবিষ্যৎ স্ত্রীও উনার মত হোক; উনার পথ অনুসরণ করুক। আমি ইনকাম করছি, টাকার যোগান দিচ্ছি সংসারে। আমি থাকতে কেন আমার বউ বাইরে কাজ করবে? এখানে তো প্রেস্টিজের ব্যাপার জড়িত।  চিন্তাটা কেন প্রত্যেক মুসলিম পুরুষের ঘিলুতে ঢুকে না, আমার বুঝে আসে না

১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ খৃস্টাব্দ    

2 comments:

  1. ভবিষ্যত বউয়ের জন্য শুভকামনা

    ReplyDelete
    Replies
    1. জাজাকআল্লাহু খাইরান।

      Delete