Friday, January 6, 2017

দ্বীন শিক্ষায় সতর্কতা । পর্ব - ১


  بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

              শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু 


অনেকেই প্রশ্ন করেন, “কোনো ‘আলিম—যিনি অনেক জানেন, কিন্তু তার মধ্যে হয়তো সেই পরিমাণ চর্চা নেই—সে কী করছে না করছে এত কিছু না-ভেবে শুধু দীন শেখার উদ্দেশ্যে তাঁর কাছে গেলে ক্ষতি কী?”
আপাতদৃষ্টিতে প্রশ্নটি যুক্তিসঙ্গত মনে হলেও, নিজেকে একবার জিজ্ঞেস করে দেখুন তো, “আমি কি এমন কারও কাছ থেকে বিমান ওড়ানো শিখব, যে কিনা বিমান সম্বন্ধে সবকিছুই জানে, অথচ কখনো কোনো বিমান ওড়ায়নি?”
আসলে সমস্যাটা হচ্ছে ইসলামের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে। ইসলাম কোনো মতবাদ বা কারও ব্যক্তিগত ভাবাদর্শ নয়। ইসলামের সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা হয়েছে একে মতবাদের স্তরে নামিয়ে এনে। আর দশটা মতবাদ আর দর্শন যেভাবে শিখি ইসলামকেও আজ আমরা সেভাবে শিখছি। আমরা ইসলামের মূলনীতিগুলো শিখি, আইনের জটিল খুঁটিনাটি বিষয়গুলো শিখি, এটা ওটার মানে শিখিকিন্তু যা শিখেছি সেটা চর্চা করার কোনো প্রয়োজন দেখি না। এটাই কি পূর্বসূরি-সালাফদের নীতি?

আপনারা অনেকেই ইব্‌ন ‘উমার (রা.)-এর সেই ঘটনাটার সাথে পরিচিত। সেখানে আমরা দেখি, সবকিছুর ওপরে তাঁরা চর্চা বা ‘আমাল করাকে গুরুত্ব দিতেন। যা শিখেছেন সেটার চর্চা করে সন্তুষ্ট না-হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ইচ্ছে করেই আর নতুন কিছু শিখতেন না। কত সুন্দর করেই না আমরা মানুষদের এ ঘটনাগুলো বলে বেড়াই কিন্তু আমাদের মধ্যে সেই চর্চা কোথায়? এটা কেমন মানসিকতা?

ইসলাম একটি জীবন ব্যবস্থা। নৈতিক মূল্যবোধের বাস্তব প্রতিচ্ছবি। চর্চা ও আচার-আচরণের মাধ্যমে ইসলামের প্রকৃত চিত্র ফুটে ওঠে। পরিপূর্ণভাবে ইসলাম চর্চা করছেন এমন কাউকে সরাসরি দেখে ও তাঁর সাথে থেকে ইসলাম যতটা শেখা যায়, কেবল বই পড়ে কিংবা কিছু লেকচার শুনে তার সামান্যই শেখা যায়। সাহাবাদের মর্যাদা কেন এত উঁচুতে? কারণ তাঁরা পেয়েছেন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গ। তাঁর সাথে থেকে থেকে ইসলামের পাঠ নিয়েছেন সাহাবারা। নিজেদেরকে দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপন করে এভাবেই শিক্ষা দিতেন পূর্বসূরি বিদ্বানগণ।